Skip to main content
 

আমাদের কথা

..

আমাদের কথা

 

          গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশনা Bangladesh District Gazetteers-এর তথ্যমতে পার্বত্য চট্টগ্রাম মুঘল শাসনাধীন বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিল। ১৭৬৫ সালে বাংলা বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানী ইংরেজদের হাতে চলে আসে। ১৮৬০ সালের ২২নং আইন এবং একই বছরের ২০ জুন তারিখের ৩৩০১নং প্রজ্ঞাপন অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম আলাদা জেলা হয়। দেওয়ানি, ফৌজদারি রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দিয়ে Captain Magrath-কে উক্ত জেলার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। সাত বছর পর ১৮৬৭ সালে তত্তাবধায়ক পদ পরিবর্তন করে কার্যপরিধি বাড়িয়ে ডেপুটি কমিশনার করা হয় এবং প্রথম ডেপুটি কমিশনার হিসেবে Captain T.H Lewin-কে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি অন্য দায়িত্বের পাশাপাশি দেওয়ানি ফৌজদারি বিচার করতেন।

            স্বাধীন নিরপেক্ষ বিচারালয়ে ন্যায় বিচার প্রাপ্তি বিচার প্রার্থীর অধিকার হলেও ইংরেজরা পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বর্তমান তিন পার্বত্য জেলায় নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ১৭ জানুয়ারী ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে তারিখে ২০টি ধারা বিশিষ্ট The Chittagong Hill Tracts Regulation, 1900 জারি করেন। ডেপুটি কমিশনার-এর আদেশের বিরুদ্ধে আপীল কর্তৃপক্ষ বিধান করা হয় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে। ব্যবস্থায় বিচার প্রার্থীর আইনজীবী নিয়োগ নিষিদ্ধ ছিল। দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থার উপর হাইকোর্টের কোন নিয়ন্ত্রণ   তত্ত্ববধান ছিল না।

            বর্তমানে বান্দরবানের বিচার ব্যবস্থাকে মোটাদাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ) আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা ) প্রথাগত ব্যবস্থা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নির্দেশনায় প্রণীত সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে একই প্রকৃতির আদালত ট্রাইবুন্যাল থাকার জন্য সংবিধানের ১১৪ হতে ১১৬- অনুচ্ছেদে অধঃস্তন আদালতের বিধান করা হয় এবং ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ হতে পৃথকীকরণের বিধানও সন্নিবেশ করা হয়। ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার (52 DLR AD 82) নির্দেশনার আলোকে নভেম্বর ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ তারিখে সারাদেশে বিচার বিভাগ পৃথক হলেও ১৯৮১ সালে ঘোষিত The District (Extension to Chattagong Hill Tracts) Ordinance 1984-এর মাধ্যমে বৈধতা প্রাপ্ত তিন পার্বত্য জেলায় (পার্বত্য চট্টগ্রাম) দেওয়ানি বিচার দায়রা আদালত পৃথক হয়নি। রেওয়াজ প্রথার ভিত্তিতে ঐতিহ্যগতভাবে উপজাতীয় বিষয়ে পাড়ার কারবারী, মৌজা হেডম্যান সার্কেল চীফ বিচার করেন। রেগুলেশনের আওতায় প্রণীত বিধিমালার ৪০ বিধি অনুসারে সার্কেল চীফের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডেপুটি কমিশনার রিভিশন গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৯ সনের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের ৬৬ ধারার বিধানমতে চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনার আপিল গ্রহণ শ্রবণ করে সিদ্ধান্ত দেন।

            ২০০৩ সালে The Chittagong Hill Tracts Regulation (Amendment) Act.2003 পাশ হয়। এই আইনের মাধ্যমে ডেপুটি কমিশনার বিভাগীয় কমিশনারের উপর ন্যাস্ত বিচারিক ক্ষমতা বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অধীনস্ত বিচারিক কর্মকর্তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। BLAST সহ তিন পার্বত্য জেলার আইনজীবীদের দায়ের করা রীট পিটিশনের রায়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার (61 DLR 109) প্রেক্ষিতে তিন পার্বত্য জেলায় ০১ জুলাই ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ তারিখে জেলা দায়রা জজ আদালত চালু হয়। সম্প্রীতির বান্দরবান খ্যাত এই পাহাড়ি জনপদে বাঙ্গালী ছাড়াও মারমা, চাকমা, মুরং, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া তংচংগ্যাসহ ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসতি রয়েছে। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সামাজিক বিচার ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় করে বান্দরবান জজশীপ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিতকল্পে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে।